You are currently viewing অশ্বিনীকুমার কারা? কিভাবে জন্ম হয়েছিল তাঁদের? সুকন্যা ও চব্যনের কাহিনী। Vedic Ashwini Kumar Brothers

অশ্বিনীকুমার কারা? কিভাবে জন্ম হয়েছিল তাঁদের? সুকন্যা ও চব্যনের কাহিনী। Vedic Ashwini Kumar Brothers

আমরা যারা হিন্দুদের ৩৩ কোটি দেবতা বলে দাবী করি তাঁরা হয়ত জানি না আসলে বেদ অনুসারে আমাদের দেবতাগণ মোট ৩৩ প্রকার। সংস্কৃত শব্দ “ত্রয়স্তিমাশতি কোটি” শব্দটির বাংলা অর্থ ৩৩ প্রকার যা আমরা ৩৩ কোটি বলে মনে করি। এই ৩৩ প্রকার দেবতার মধ্যে রয়েছেন ৮ প্রকার বসু, ১১ প্রকার রুদ্র, ১২ প্রকার আদিত্য এবং ২ জন অশ্বিনীকুমার। কিন্তু আপনারা জানেন কি এই অশ্বিনীকুমারদ্বয় আসলে কারা? মহাভারতে অশ্বিনীকুমার ভ্রাতাদের ঔরসে মাদ্রীর গর্ভে জন্ম নেওয়া নকুল ও সহদেব পর্যন্তই  অশ্বিনীকুমার সম্পর্কে আমাদের জানার পরিধি সীমাবদ্ধ। কিন্তু আজ একটু বিস্তারিত জানার পালা। আজ আমরা জানতে চাই এই অশ্বিনীকুমারগণ আসলে কারা? কিভাবে জন্ম হয়েছিল তাঁদের? তাঁদের শরীর অর্ধেক মানুষ ও অর্ধেক ঘোড়ার মত কেন? স্বর্গলোকে তাঁদের কাজ টা কি? অশ্বিনীকুমার ব্রত বা চাতের পুজো আসলে কি? এবং সবশেষে থাকছে স্বর্গের সাধারন কর্মচারী থেকে তাঁরা কিভাবে সোমপানের অধিকারী হয়েছিলেন সেই পৌরাণিক কাহিনীটি।

অশ্বিনীকুমারগণ আসলে কারা?

বেদের উদ্ধৃতি থেকে জানা যায়, অশ্বিনীকুমারগণ স্বর্গের বৈদ্য। এই জমজ ভ্রাতাগণ স্বর্গীয় চিকিৎসক হিসেবে পরিগণিত। তাঁদের শরীর মানুষের এবং মাথা অশ্ব তথা ঘোড়ার। আবার কোন কোন রূপে তাদেরকে অশ্বারোহী অবতারেও দেখা যায়। একটি সুবর্ণ রথে দিনে তিনবার ও রাতে তিনবার পৃথিবী পরিভ্রমণ করেন তাঁরা। তবে স্বর্গীয় বর্ণাশ্রম প্রথায় এদেরকে সাধারণত শুদ্র বা মতান্তরে বৈদ্য হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। তবে সবকিছু ছাড়িয়ে তাঁদের প্রধান পরিচয় হল তাঁরা স্বর্গবৈদ্য, অর্থাৎ দেবচিকিৎসক, ত্রিভুবনের সব বৈদ্য বা চিকিৎসকের আরাধ্য দেবতা তাঁরা, তাঁরা চিরযৌবন ও চিরায়ুর প্রতীক। চিকিৎসা বিষয়ে তাঁরা যে গ্রন্থখানি রচনা করেছিলেন সেটির নাম হলো চিকিৎসা-সার-তত্ত্ব। মহাভারতের আদিপর্বের উপমন্যু উপখ্যান থেকে জানা যায়, আয়োধধৌম্য ঋষির শিষ্য উপমন্যু বা অরুণি ক্ষুধা সহ্য না করতে পরে আকন্দগাছের পাতা খেয়ে অন্ধ হয়ে গেছিলেন, তখন তিনি এই কুমারদ্বয়ের আরাধনা করে তাঁর চোখের দৃষ্টি ফিরে পেয়েছিলেন।

অশ্বিনীকুমারদ্বয়ের জন্ম

মার্কেণ্ডেয় পুরাণের বৈবস্বত ও সাবর্ণির উপখ্যান থেকে জানা যায়, সূর্যপত্নী শরণ‍্যু তথা সংজ্ঞা তাঁর স্বামী সূর্যের অসহ্য তেজ সহ্য করতে না পেরে, সূর্যকে দেখলে চোখ নামিয়ে ফেলতেন। এই জন্য সূর্য ক্রুদ্ধ হয়ে সংজ্ঞাকে অভিশাপ দেন যে, সংজ্ঞা তাঁর চক্ষু সংযমন করার জন্য প্রজাদের সংযমনকারী যম দেবতাকে প্রসব করবেন। এরপর এই অভিশাপের ফলে দেবী সংজ্ঞা মৃত্যুর দেবতা যমকে প্রসব করেন। এরপর দেবী সংজ্ঞা অত্যন্ত ভীত হয়ে চপলভাবে সূর্যের দিকে দৃষ্টিপাত করতে লাগলেন। কিন্তু এতেও সন্তুষ্ট হলেন না সুর্যদেব। তিনি তাঁর স্ত্রীর এই চপল চক্ষু দেখে আবারও অভিশাপ দিলেন যে, দেবী সংজ্ঞা চঞ্চলস্বভাবা একটি নদী প্রসব করবেন। এই অভিশাপের কারনে দেবী সংজ্ঞা, যমী বা যমুনা নামক এক কন্যার জন্ম দেন। পরবর্তীতে এই কন্যাই মর্ত্ত্যে যমুনা নদী রূপে প্রবাহিত হন।

আরও পড়ুনঃ  বিশ্বের সবচেয়ে ধনী মন্দির, সম্পদ পাহারা দেন নাগরাজ

যম ও যমুনার জন্মের পর, স্বামীর তেজ ও ক্রোধ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য, নিজের অনুরূপ একটি ছায়া সৃষ্টি করেন সংজ্ঞা। এরপর সূর্য, যম ও যমুনার পরিচর্যার ভার সেই ছায়ার উপর অর্পণ করে স্বামীগৃহ ত্যাগ করেন সংজ্ঞা। এরপর অশ্বরূপে বা ঘোড়ার রূপ ধারন করে উত্তর কুরুবর্ষে পরিভ্রমণ করতে থাকেন তিনি। কালক্রমে সূর্যদেব তাঁর পুত্র-কন্যা ও শ্বশুর বিশ্বকর্মার কাছ থেকে জানতে পারেন তাঁর ক্রোধ এবং তেজেই বশেই আজ সংজ্ঞা ঘোটকীরূপে দিগভ্রান্ত হয়ে ভ্রমণ করছেন। এর ফলে কিছুটা অনুশোচনায় পড়ে সূর্যদেব তাঁর তেজ কমিয়ে দেবী সংজ্ঞার সন্ধান করতে লাগলেন। এরপর ধ্যাণবলে সংজ্ঞার অবস্থান জানতে পেরে সেই অশ্বরূপিনী সংজ্ঞার সাথে বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন করেন সূর্যদেব। এর ফলে অশ্বিনীকুমারদ্বয় নামক দুই জমজ পুত্র ও পরে রেবন্ত নামক আরও এক পুত্রের জন্ম হয়। এই দুই জমজ পুত্রের মধ্যে জেষ্ঠ্য পুত্রের নাম ছিল নাসত্য ও কনিষ্ঠ পুত্রের নাম ছিল দস্রা। তাছাড়া তাঁদের জন্মের পর দেবী সংজ্ঞা যে তৃতীয় সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন সেই রেবন্ত ছিলেন অশ্বদের অধিপতি দেবতা। যেহেতু পুত্র উৎপাদনের সময় দেবী সংজ্ঞা অশ্বিনী অর্থাৎ ঘোটকী রূপে বিদ্যমান ছিলেন তাই তাঁর জমজ পুত্রদ্বয়ের নামকরন করা হয়েছিল অশ্বিনীকুমার। আবার কোন কোন মতে সূর্যদেবও তাঁর অশ্বপত্নীর সাথে বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপনের সময় নিজেও অশ্বের রূপ ধারন করেছিলেন। তবে অশ্বিনীকুমারদয় নামের পাশাপাশি অর্কতনয়, অর্কনন্দন, অর্কপুত্র, অর্কসূত, অশ্বিনীপুত্র, অশ্বিনীসূত, ইত্যাদি নামেও পরিচিত হয়েছিলেন এই সূর্যপুত্রদ্বয়।

অশ্বিনীকুমার ব্রত বা ভাতের পূজা

আপনারা অনেকেই হয়ত জানেননা মনোস্কামনা পূর্ণার্থে ও রোগমুক্তির আশায় অশ্বিনীকুমার ব্রত বা ভাতের পূজা করা হয়ে থাকে ভারতবর্ষের বিভিন্ন স্থানে। পুরাণমতে সূর্যদেবের তেজ, ক্রোধ ও অভিশাপে জর্জরিত হয়ে দেবী সংজ্ঞা শরাণগত হয়েছিলেন জগজ্জননী দেবী পার্বতীর। সংজ্ঞার এই দুর্দশা দেখে দয়া হয়েছিল পরম করুণাময়ী মাতা পার্বতীর। তাই তিনি এক মুষ্টি চাল দান করেছিলেন সূর্যপত্নী সংজ্ঞাকে। এরপর সেই চালটুকু আশ্বিন মাসের শেষরাত্রিতে রন্ধন করে মহাদেবের অর্চনা করে কার্ত্তিক মাসের প্রথম দিনে ভোজন করার বিধান দিয়েছিলেন তিনি। দেবী পার্বতীর সেই আশির্বাদী চালগুলো রেঁধে পান্তাভাত বানিয়ে ভোজন করেছিলেন সংজ্ঞা। এর ফলে তাঁর মনোস্কামনা পূর্ণ হয়েছিল এবং রোগমুক্তি ঘটেছিল। এবং এরই ধারাবাহিকতায় তিনি আশ্বিনীকুমারদ্বয় নামক দুই রূপবান ও গুণবান পুত্র লাভ করেছিলেন। তাই আশ্বিনে রাঁধে, কার্তিকে খায়, যেই বর মাগে, সেই বর পায় এই উপজীব্যকে সামনে রেখে আজও পালন করা হয় অশ্বিনীকুমার ব্রত। বাংলাদেশের চট্টগ্রামে বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে পালিত হয় এই ভাত পূজা বা পান্তা ভাতের অনুষ্ঠান। নানা উপাচারে ভাত রন্ধন ও ভোজনের এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে রোগমুক্তি ও মনোস্কামনা পূর্ণ হওয়ার জন্য আবেদন জানানো হয় অশ্বিনীকুমারদ্বয়ের কাছে।

আরও পড়ুনঃ  রাত নামলেই ১১ শিব মন্দির থেকে ভেসে আসে নারী কণ্ঠের কান্না || 11 Shiva Temple, Abhaynagar, Jessore

অশ্বিনীকুমারগণ কিভাবে দ্রাক্ষারস পান করার অধিকার পেয়েছিলেন?

একবার ভৃগুপুত্র চ্যবন নর্মদার কাছে বৈদূর্য পর্বতে দীর্ঘ কাল ধ্যানমগ্ন ছিলেন। সেই দীর্ঘ সময়ে চ্যবন মুনির দেহে বল্মীক তথা উইঢিপি ও গাছপালায় আবৃত হয়। এসময় একদিন রাজা শর্যাতি তাঁর চার হাজার স্ত্রী ও সুন্দরী কন্যা সুকন্যাকে নিয়ে বৈদূর্য পর্বতে বেড়াতে আসেন। সুন্দরী সুকন্যাকে দেখে মোহিত হয়ে বল্মীক স্তুপ থেকে চ্যবন তাঁকে ক্ষীণ কণ্ঠে ডেকেছিলেন কিন্তু সুকন্যা সেই আওয়াজ ভালোভাবে শুনতে পাননি। তবে কৌতূহলবশত তিনি এগিয়ে গেলেন সেই বাল্মীক স্তুপের দিকে। সেই স্তুপের মধ্যে চব্যন ঋষির ক্ষীণ চোখযুগল দেখে জোনাকি ভেবে সেগুলোকে কাঁটা দিয়ে বিদ্ধ করেন সুকন্যা। এতে চ্যবন মুনি ক্রুদ্ধ হয়ে রাজা শর্যাতির সৈন্যদের মলমূত্র নিরোধ করে দেন। সব কিছু জানতে পেরে রাজা শর্যাতি কন্যার হয়ে চ্যবন মুনির কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। চ্যবন মুনি জানান, দর্প ও অহঙ্কারের বশে সুকন্যা এই কাজ করেছেন। যদি সুকন্যা তাঁর সাথে বিবাহে সম্মত হন তাহলে তিনি তাঁকে ক্ষমা করবেন। অগত্যা রাজা শর্যাতি সৈন্যদের কথা ভেবে কন্যা সুকন্যাকে চ্যবন মুনির হস্তে সম্প্রদান করেন।

এর কিছুকাল পরে এক স্নিগ্ধ সকালে চ্যবন-পত্নী সুকন্যা স্নান করতে গিয়েছিলেন প্বার্শবর্তী নদীতে। এসময় সেখান দিয়ে সুবর্ণ রথে ভ্রমণ করছিলেন অশ্বিনীকুমারদ্বয়। হঠাৎ স্নানরতা সুকন্যার নগ্ন রূপ দেখে মোহিত হলেন তাঁরা। সুকন্যাকে প্রস্তাব দিলেন তাঁদের যে কোন একজনের স্ত্রী হওয়ার জন্য। কিন্তু সুকন্যা ছিলেন তাঁর স্বামী চব্যন ঋষির প্রতি অনুরক্ত, তাই তিনি এই দুই দেবতার প্রস্তাব অস্বীকার করলেন। কিন্তু হাল ছাড়লেন না অশ্বিনীকুমারদ্বয়। তাঁরা বললেন,  “ঋষি চব্যনের কঙ্কালসার দেহ, বৃদ্ধ বয়স প্রভৃতির কথা বিবেচনা করে আমাদের দুজনের যে কোন একজনের সাথে তোমার বিবাহ করা উচিত।” কিন্তু তাতেও ঋষি চব্যনের প্রতি সুকন্যার অনুরাগ বিন্দুমাত্র হ্রাস পেল না। তিনি আবারও বিনয়ের সাথে দেবতাদের সাথে বিবাহের প্রস্তাব অস্বীকার করলেন। সুকন্যার পতিভক্তিতে প্রীত হলেন অশ্বিনীকুমারদ্বয়। কিন্তু অধিকতর পরীক্ষা করার জন্য তাঁরা সুকন্যাকে বললেন “আমরা তোমার স্বামীকে নতুন যৌবন দান করব। তবে শর্ত একটাই, মুনি যৌবনপ্রাপ্ত হওয়ার পরে আমাদের তিনজনের মধ্যে একজনকে পতিরূপে বরণ করতে হবে তোমাকে।”

আরও পড়ুনঃ  মৃত্যুর পূর্বে যমরাজ আমাদেরকে পাঠান ৪টি চিঠি || 4 Letters of Yamraj before Death ||

অশ্বিনীকুমারদ্বয়ের এই শর্তে রাজি হলেন সুকন্যা। এরপর “চ্যবনপ্রাশ” নামক ঔষধির সাহায্যে মুনিকে নবযৌবন দান করলেন তাঁরা। এরপর তিনজনই একই রূপ ধারন করে দাড়ালেন রূপবতী সুকন্যার সামনে। তখন অশ্বিনীকুমারদ্বয় সুকন্যাকে বলেন, তুমি এই বার যে কোনও একজনকে স্বামীত্বে বরণ করো। কিন্তু এবারও নিজের পতি চব্যন ঋষিকেই নিজের স্বামী হিসেবে চয়ন করলেন সুকন্যা। এতে সন্তুষ্ট হলেন অশ্বিনীকুমারদ্বয়। আর চব্যন ঋষিও সন্তুষ্ট হলেন স্ত্রীর পতিপ্রেম দেখে এবং দেবকুমারদের প্রতি প্রীত হলেন তাঁকে পুনরায় যৌবনদান করার জন্য। এবার এই দুই দেবতাকে কিছু দিতে চাইলেন চব্যন মুনি। তিনি জানতে পারলেন তাঁরা স্বর্গের শূদ্র হওয়ার কারনে তাঁদের দ্রাক্ষারস পানের অধিকার নেই। তাই এবার তিনি সচেষ্ট হলেন তাঁদের সেই অধিকার প্রতিষ্ঠায়। কারন সোমরস পানের অধিকারী হওয়ার পরেই তাঁরা দেবকর্মচারী থেকে সম্ভ্রান্ত দেবতা হিসেবে বলে বিবেচিত হবেন তাঁরা।

সুতারাং নিজের পরিকল্পনামাফিক এক বিরাট যজ্ঞের আয়োজন করলেন ঋষি চব্যন। সেই যজ্ঞের জ্বলন্ত অগ্নিকুণ্ডের মধ্যে তিনি অশ্বিনীকুমারদের উদ্দেশে আহুতি দেওয়ার জন্য সোমপাত্র গ্রহণ করলেন। কিন্তু মন্ত্র পাঠ করার পর যখন তিনি আহুতি দিতে যাবেন, তখন মনে হল কেউ যেন তাঁর হাতটাকে আটকে দিয়েছে।  মুনির বুঝতে বাকি থাকল না স্বয়ং দেবরাজ ইন্দ্র চাননা অশ্বিনীকুমারদ্বয় সোমরসের অর্ঘ্য পান। এসময় ইন্দ্র প্রকট হয়ে চ্যবন মুনিকে বললেন, হে মহর্ষি! এই দুই বৈদ্য আমার মতো সোমরসের অর্ঘ্য-সম্মান পেতে পারেন না। তাঁরা সামান্য চিকিৎসকমাত্র। তাঁরা ভিষক্ বৈদ্য, দেবতা নন মোটেও। ওঁরা দেবতাদের চিকিৎসা করেন, ওঁরা হলেন কর্মকর। রোগির মলমূত্র, ক্ষত, পুঁজ ইত্যাদি নিয়ে যাদের কারবার তাঁরা আমার সঙ্গে সমান আসনে বসবেন, এ হতে পারে না। আপনি এই কাজ থেকে সরে আসুন।

কিন্তু চ্যবন মুনি দমবার পাত্র নন। তিনি দেবরাজের কথা উপেক্ষা করে পুনরায় সোমরসের পাত্র নিয়ে প্রস্তুত হলেন অশ্বিনীকুমারদ্বয়ের জন্য। এই বার ইন্দ্র প্রচণ্ড ক্রুদ্ধ হয়ে মুনিকে বললেন, এক ফোঁটা সোমরস যদি অশ্বিনীকুমারদ্বয়ের উদ্দেশে আহুতি হিসাবে পড়ে আমি আপনাকে বজ্র দ্বারা প্রহার করবো। শূদ্র চিকিৎসক কখনওই ব্রাহ্মণের মর্যাদা পেতে পারে না। এবার ক্রুদ্ধ হলেন চব্যন। সিদ্ধ ঋষি হিসেবে তাঁর ক্ষমতাও কম নয়। তিনি মন্ত্রবলে দেবরাজের দুই হাত স্তব্ধ করে দিলেন। এভাবে এক পর্যায়ে ইন্দ্র ভীত হয়ে চ্যবন মুনিকে বললেন, “আপনার কথা মেনে নিচ্ছি। এবার থেকে অশ্বিনীকুমারদ্বয়ও ব্রাহ্মণ্য যজ্ঞে আমাদের মতোই সোমপায়ী অভিজাত দেবতা হিসাবে মান্য হবেন।” আর এভাবেই সম্ভ্রান্ত দেবত্বে উন্নীত হলেন অশ্বিনীকুমারদ্বয়।

5/5 - (1 vote)

Leave a Reply