You are currently viewing শ্রী শিক্ষাষ্টকম- শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর বাণী

শ্রী শিক্ষাষ্টকম- শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর বাণী

শ্রী শিক্ষাষ্টকম

চেতোদর্পণমার্জনং ভবমহাদাবাগ্নি-নির্বাপণং
শ্রেয়ঃকৈরবচন্দ্রিকাবিতরণং বিদ্যাবধূজীবনম্।
আনন্দাম্বুধিবর্ধনং প্রতিপদং পূর্ণামৃতাস্বাদনং
সর্বাত্মস্নপনং পরং বিজয়তে শ্রীকৃষ্ণসংকীর্তনম্।।১।।
অনুবাদঃ- চিত্তরূপ দর্পণের মার্জনকারী, ভবরূপ মহাদাবাগ্নি নির্বাপণকারী, জীবের মঙ্গলরূপ কৈরবচন্দ্রিকা বিতরণকারী, বিদ্যাবধূর জীবনস্বরূপ, আনন্দ-সমুদ্রের বর্ধনকারী, পদে পদে পূর্ণামৃতাস্বাদনস্বরূপ এবং সর্বস্বরূপে শীতলকারী শ্রীকৃষ্ণ-সংকীর্তন বিশেষরূপে জয়যুক্ত হোন।
নাম্নামকারি বহুধা নিজসর্বশক্তি-
স্তত্রার্পিতা নিয়মিতঃ স্মরণে ন কালঃ। 
এতাদৃশী তব কৃপা ভগবন্মমাপি
দুর্দৈবমীদৃশমিহাজনি নানুরাগঃ।।২।।
অনুবাদঃ হে ভগবান! তোমার নামই জীবের সর্বমঙ্গল বিধান করেন। এইজন্য তোমার ‘কৃষ্ণ’, গোবিন্দাদি বহুবিধ নাম তুমি বিস্তার করেছ। সেই নামে তুমি তোমার সর্বশক্তি অর্পণ করেছ এবং সেই নাম স্মরণের কালাদি-নিয়ম (বিধি বা বিচার) কর নি। হে প্রভু! এইভাবে কৃপা করে জীবের পক্ষে তুমি তোমার নামকে সুলভ করেছ, তবুও আমার নামপরাধরূপ দর্দৈব এমনই প্রবল যে তোমার সুলভ নামেও আমার অনুরাগ জন্মাতে দেয় না।
তৃণাদপি সুনীচেন তরোরপি সহিষ্ণুণা। 
অমানিনা নানদেন কীর্তনীয়ঃ সদা হরিঃ।।৩।।
অনুবাদঃ ‍যিনি তৃণাপেক্ষা আপনাকে ক্ষুদ্র জ্ঞান করেন, ‍যিনি তরুর মত সহিষ্ণু হন, নিজে মানশূন্য হয়ে অপর লোককে সম্মান প্রদান করেন, তিনিই সর্বদা হরিকীর্তনের অধিকারী।
ন ধনং ন জনং ন সুন্দরীং কবিতাং
বা জগদীশ কাময়ে। 
মম জন্মনি জন্মনীশ্বরে 
ভবতাদ্ভক্তিরহৈতুকী ত্বয়ি।।৪।।
অনুবাদঃ হে জগদীশ! আমি ধণ, জন বা সুন্দরী রমণী কামনা করি না; আমি কেবল এই কামনা করি যে, জন্মে জন্মে তোমাতেই আমার অহৈতুকী ভক্তি হোক।
অয়ি নন্দতনুজ কিঙ্করং
পতিতং মাং বিষমে ভবাম্বুধৌ। 
কৃপয়া তব পাদপঙ্কজ
স্থিতধূলীসদৃশং বিচিন্তয়।।৫।।
অনুবাদঃ ওহে নন্দনন্দন! আমি তোমার নিত্য কিঙ্কর (দাস) হয়েও স্বকর্মবিপাকে বিষম ভব-সমুদ্রে পড়েছি। তুমি কৃপা করে আমাকে তোমার পাদপদ্মস্থিত-ধূলিসদৃশ রূপে চিন্তা কর।
নয়নং গলদশ্রুধারয়া বদনং গদগদরুদ্ধয়া গিয়া। 
পুলকৈর্নিচিতং বপুঃ কদা তব নামগ্রহণে ভবিষ্যতি।।৬।।
অনুবাদঃ হে নাথ! তোমার নাম গ্রহণে কবে আমার নয়ন-যুগলে গলদশ্রুধারায় শোভিত হবে? বাক্য-নিঃসরণের সময়ে বদনে গদগদ-স্বর নির্গত হবে এবং আমার সমস্ত শরীর পুলকিত হবে?
যুগায়িতং নিমেষেণ চক্ষুষা প্রাবৃষায়িতম্।
শূন্যায়িতং জগৎ সর্বং গোবিন্দবিরহেণ মে।।৭।।
অনুবাদঃ হে গোবিন্দ! তোমার অদর্শনে আমার ‘নিমেষ’-সমূহ ‘যুগ’ বৎ বোধ হচ্ছে, চক্ষুদ্বয় মেঘের মত অশ্রুবর্ষণ করছে এবং সমস্ত জগৎ শূন্যপ্রায় বোধ হচ্ছে।
আশ্লিষ্য বা পাদরতাং পিনষ্টু মা- 
মদর্শনান্মর্মহতাং করোতু বা। 
যথা তথা বা বিদধাতু লম্পটো
মৎপ্রাণনাথস্তু স এব নাপরঃ।।৮।।
অনুবাদঃ এই পাদরতা দাসীকে কৃষ্ণ আলিঙ্গনপূর্বক পেষণ করুন, অথবা অদর্শন দ্বারা মর্মাহতই করুন, তিনি লম্পট পুরুষ, আমার সঙ্গে যে রকম আচরণই করুন না কেন, তিনি সর্বদা আমারই প্রাণনাথ।
4.3/5 - (3 votes)
আরও পড়ুনঃ  রাধা কৃষ্ণের দোলযাত্রা ও হোলি খেলার ইতিহাস || শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর জন্মতিথি ||

Leave a Reply